সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

হাদীসটি ইমামের যুগে সহীহ ছিল কিন্তু পরবর্তীতে যঈফ হয়েছে

এমনটি দাবী করা যে, হাদীসটি ইমামের যুগে সহীহ ছিল কিন্তু পরবর্তীতে যঈফ হয়েছে
বর্তমান যুগের কিছু লোক নিজেদের বিরুদ্ধে যাওয়া সহীহ হাদীস প্রত্যাখ্যান আর নিজেদের পক্ষে থাকা যঈফ হাদীসকে গ্রহণের উদ্দেশ্যে হাদীসের একটি নতুন মূলনীতি উদ্ভাবন করেছে। নিজেদের জঘন্য তাক্বলীদের উপর দৃঢ় থাকার উদ্দেশ্যে তারা বলে থাকে, এটা সম্ভব যে, তারা যেই হাদীসের মাধ্যমে দলিল পেশ করছে সেটা তাদের ইমামের যুগে সহীহ ছিল কিন্তু পরবর্তীতে যোগ হওয়া নতুন দুর্বল রাবির কারণে তা যঈফ হয়ে গেছে। আর এই কারণে যেই হাদীসটি তাদের ইমামের কাছে সহীহ সেটাই সহীহ যদিও পরে সেটা যঈফ হয়েছে।
উত্তরঃ এই নতুন মূলনীতির প্রধান উদ্দেশ্য হলো নিজেদের তুচ্ছ কার্যসাধন বা হাদীসকে সহীহ কিংবা যঈফ বিচার করার জন্য ইমাম আবু হানিফার ফাত’ওয়াকে মানদণ্ড বানানো এটা বলে যে, “সম্ভবত ইমাম আবু হানিফার যুগে এই হাদীসটি সহীহ ছিলো”। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এটা একটা হাস্যকর দাবী।
পয়েন্ট – ১ঃ
আমাদের প্রশ্ন হলো, একটা যঈফ হাদীস ইমামের যুগে সহীহ ছিলো এবং পরে যঈফ হয়েছে, তার প্রমাণ কী? অন্য কথায়, হাদীসের সনদে দুর্বলতা এসেছে কোনো এক বর্ণনাকারীর কারণে যিনি ইমামের পরে এসেছেন; এটা কীভাবে প্রমাণ করে যে, ইমামের যুগে হাদীসটি সহীহ ছিলো?
কারণ, যে যুগেই দুর্বলতা আসুক না কেনো, এটা পুরো সনদ বা মতনকে অপ্রমাণিত বা বাতিল প্রমাণ করে। এটা মনে রাখতে হবে যে, পরবর্তি সময়ের যে বর্ণনাকারী আমাদেরকে জানাচ্ছে যে সে অমুক অমুকের কাছ থেকে, সে অমুক অমুক ইমামের কাছ থেকে, সে অমুক অমুক সাহাবার কাছে থেকে এবং সে মহানবী (সা.) থেকে হাদীসটি শুনেছে। তার মানে, এই বর্ণনাকারী হলো এমন একজন যে নির্দিষ্ট কোনো ইমামের রেফারেন্স দেয় এবং এটা তাঁর উপর আরোপ করে। তারপর তাঁর থেকে মহানবীর (সা.) এর উপর। তাই যদি বর্ণনাকারী দুর্বল হয় তাহলে অবধারিতভাবে সে যে ইমামের রেফারেন্স দিচ্ছে সেই খবরটিও দুর্বল এবং অপ্রমাণিত। তার ফলে বর্ণনাকারীর পুরো বর্ণনাই প্রত্যাখ্যাত এবং অগ্রহণযোগ্য। তাহলে কীভাবে বলা যেতে পারে যে, ইমাম থেকে মহানবী (সা.) পর্যন্ত হাদীসটি সহীহ।
পয়েন্ট – ২ঃ
তর্কের খাতিরে যদি এই হাস্যকর দাবী মেনেও নিই, তাহলে পৃথিবীর কোনো হাদীসকেই যঈফ বা জাল বলা যাবে না কারণ প্রত্যেক হাদীসের শেষেই সাহাবী বা মহানবী (সা.) এর রেফারেন্স থাকে এবং যা কিছু দুর্বলতা, তা মহানবী (সা.) এবং সাহাবাদের পরের যুগেই এসেছে। তাই তাদের যুক্তি অনুযায়ী একথা বলা যেতে পারে যে, “এই হাদীসটি সাহাবা এবং মহানবী (সা.) এর যুগে সহীহ ছিল আর পরবর্তি যুগে দুর্বলতা এসেছে।
আমাদের বুঝে আসে না কীভাবে লোকেরা এমন একটা হাস্যকর জিনিসে বিশ্বাস করে।
উৎসঃ Hadeeth was Saheeh at the time of the Imaam and the weakness only came later on
সংকলনঃ  ইবনে আবি রাযা   |   অনুবাদঃ  মুজাহিদুল ইসলাম স্বাধীন
সম্পাদনাঃ  সত্যান্বেষী  রিসার্চ  টীম
পরিবেশনা ও পুনঃ নিরীক্ষনঃ সত্যান্বেষী  রিসার্চ  টীম

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন